Osama Bin Laden Encounter||Real Story YT
আজ থেকে ১৩ বছর আগে ঘটনা, ১ মে ২০১১, রাত ১০.৩০ মিনিটে আফগানিস্তানের জালালাবাদ থেকে দুটি আমেরিকান Black Hawks হেলিকপ্টারে অবস্থিত ২৪ জন সেনা পাকিস্তানের এবেটাবাদ পৌঁছায় এবং সেখানে লুকিয়ে থাকা বিশ্বের Most wanted Criminal ওসামা বিন লাদেন কে মেরে তার বডি কে নিয়ে আবার জালালাবাদে ফিরে আসে। কিভাছেন এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল আর পাকিস্তান জানতেই পেলো না? হ্যা ঠিক তাই, সম্পূর্ণ ঘটনাটি জানার জন্য পুরো Post পড়তে থাকো।
ওসামা বিন লাদেন ১০ই মার্চ ১৯৫৭ সালে সৌদি আরব এর রিয়াদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় লোকাল স্কুলে পড়াশোনা করার পর রিয়াদের King Abdul Aziz University এ ভর্তি হন। যেখানে দুইজন বন্ধু সৌইদ কুতুব ও আব্দুলা আজম এর সঙ্গে আলাপ হয়।
এখানেই শুরু ওসামা বিন লাদেনের জার্নি। ওসামা বিন লাদেন ওই দুই বন্ধুর সাহায্য নিয়ে আল-কায়েদা নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত করেন ১৯৮৮ সালে। এই সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হবার ২ বছর পর ইরাক সৌদি আরবে হামলা চালায়। যেটা ওসামা বিন লাদেনের জন্মস্থান ছিল।তখন ওসামা বিন লাদেন সৌদি সরকারকে সাহায্য করার জন্য তার আল-কায়েদা সংগঠনের কথা জানান এবং বলেন ওই সংগঠনের কাছে ইরাকে হার মানতেই হবে।কিন্তু সৌদি সরকার ওসামার সাহায্য না নিয়ে আমেরিকার সাহায্য নেন।
আমেরিকার যে কালচার ও জীবনযাপন ওসামা বিন লাদেনের পছন্দ হতো না। আমেরিকার কালচার সৌদি আরবে পড়ুক সেটা তিনি কখনোই চাইতেন না, এমনকি আমেরিকা সৌদি আরবকে সাহায্য করুক সেটাও তিনি চাইতেন না। যে কারনে ওসামা বিন লাদেন আমেরিকাকে শত্রুর চোখে দেখতে আরম্ভ করে। এবং তখন থেকেই ওসামা বিন লাদেন এবং তার সংগঠনের লক্ষ্য আমেরিকার ক্ষতি ছাড়া আর কিছু না।
১৯৯২ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ওসামা বিন লাদেনের ক্ষমতা দেখানোর জন্য মোট পাঁচটি আলাদা আলাদা জাইগায় হামলা চালায় ওসামা বিন লাদেন। যার মধ্যে সব থেকে বড় হামলা ছিল নাইন ইলেভেন এটাক। ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে ১৯ জন আতংবাদি চারটি এরোপ্লেন হাইজ্যাক করেন এবং দুটি এরোপ্লেন নিউইয়র্ক এর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে টুইন টাওয়ারে ক্রাশ করায়, ১টি US ডিফেন্স হেডকুয়াটার পেনটাগনে ও ১টি পেনসলভেনিয়া তে ক্রাশ করায়।যার ফলে ৩০০০ মানুষ মারা যায়।যেটি আমেরিকার সবচেয়ে বড় এটাক।
এই এটাকের পর ওসামা বিন লাদেন আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যায়। এদিকে আমেরিকার সিআইএ সংস্থা ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। আমেরিকা তো চেষ্টা করছিল লাদেনকে খোঁজার কিন্তু লাদেনের ক্লু তারা বের করতেই পারছিল না। অবশেষে ১০ বছর পর নাইন ইলেভেন এটাকে ধরা পড়া এক আতংবাদিকে CIA জেরা করার পর তারা একটি নাম শোনে আবু আহমেদ আল কুয়েতি যিনি ওসামার ডান হাত ও পাকিস্তানি কোরিয়ার ছিলেন।
এরপর CIA আবু আহমেদ আল কুয়েতিকে ট্রেস করে এবং পাকিস্তানের এবেটাবাদে চারিদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি বাড়িতে থাকতে দেখেন। তখন CIA Officer এবেটাবাদে কয়েক মাস থেকে সন্দেহজনক ভাবে ওই বিল্ডিং উপর নজর রাখে। একদিন এক ডাক্তার কে ওই বিল্ডিং এ ভ্যাকসিনেশনের জন্য CIA পাঠায় এবং Confirm হয় ওই বিল্ডিং এই ওসামা বিন লাদেন থাকেন।
তারপর আর কি CIA Head Quarter খবর যায়।CIA ও তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে এই বিষয়ে মিটিং হয়, তারা দুটি Plan তৈরি করে একটি Air Strike এর মাধ্যমে ওই বিল্ডিং শেষ করার, আর অন্যটি হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে Special Comandos ঘরের ভেতর ঢুকে ওসামা কে মারার। এয়ার স্টাইকে ওসামা বিন লাদেনের বাঁচার চান্স ছিল তাই সেই প্ল্যানটি তারা কাজে লাগাননি।
২ই মে ২০১১ রাত ১০টা ৩০ এ আফগানিস্তানের জালালাবাদ থেকে দুটি ব্ল্যাক হক্স হেলিকপ্টার নিয়ে পাকিস্তানের এভাটাবাদে অপারেশন ন্যাপচোন স্পেয়ার এর উদ্দেশ্যে ২৪ জন স্পেশাল কমান্ডো পাড়ি দেয়। ওই হেলিকপ্টার দুটি যার নাম চক ওয়ান ও চক টু এমন টেকনোলজি দিয়ে তৈরি ছিল যাতে পাকিস্তানি রেডার তাদেরকে ট্রাক না করতে পারে এবং তার আওয়াজ খুব কম ছিল। আড়াই ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পর যখন টার্গেট এর কাছে পৌঁছায় তখন চক টু হেলিকপ্টার ওসামা বিন লাদেনের বাড়ির মেন রাস্তায় কজন কমান্ডো এবং যে ঘরে ওসামা বিন লাদেন ছিল তার ছাদে বাকিদের নামিয়ে দেয়। এরপর চক ওয়ান এ যারা অবস্থিত ছিল তারা ও ওসামা বিন লাদেন এর ঘরের সামনে যে ফাঁকা জায়গা ছিল সেখানে নামতে গিয়ে হেলিকপ্টারের সমস্যা কারণে হেলিকপ্টারটি পাশের কম্পাউন্ডারে পড়ে যায়। এবং তার পাখনা গুলো ভেঙে যায় ।ওই হেলিকপ্টারের যে কমান্ডোরা অবস্থিত ছিল তাদের সেরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল না। 12 জন কামান্ডো বারোজনি সুরক্ষিত ছিল। এরপর সামনের গেটে ব্লাস্টের মাধ্যমে আস্তে আস্তে তারা ভেতরে ঢুকে। গেস্ট হাউসে ঢোকার সময় হঠাৎ কেউ একজন ভেতর থেকে ফায়ার করে, জবাবে যখন স্পেশাল কামান্ডো ফায়ার করে তখন আবু আহমেদ আল কুয়েতি কমান্ডোর গুলিতে মারা যাই ।পরে তার স্ত্রী দরজা খুলে দেয় কারণ ভেতরের তাদের ছোট বাচ্চা ছিল কমান্ডো যাতে আর গুলি না চালাই। এরপর তারা গেস্ট হাউস হয়ে সামনের মেন বিল্ডিং এ যেতে শুরু করে। মেন বিল্ডিং এ ঢুকতেই কামান্ডোরা আল কুয়েতির ভাই আবরারকে দেখতে পাই । তারা গুলি চালালে পাশে আবরারের স্ত্রী আবরার কে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে কমান্ডার গুলিতে আবরার সহ তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। সেই মুহূর্তে আবরারের ছেলেমেয়েরা চেচাতে আরম্ভ করে তখন একজন কামান্ডো আল কুয়াতির স্ত্রী ও ছেলে যেখানে ছিল সেই ঘরে তাদেরকে নিয়ে যায়। গ্রাউন্ড ফ্লোয়ারের পর ফার্স্ট ফ্লোর এ কমান্ডোরা যেতে আরম্ভ করে এবং তখনই কামান্ডো রা একজনকে পালাতে দেখে যে ছিল ওসামা বিন লাদেনের ছেলে খালেদ। খালেদ কামান্ডোদের দেখে লুকিয়ে ছিল। কামান্ডোদের মধ্যে একজন খালেদ খালেদ বলে ডাকে তখন খালেদ বেরিয়ে আসে এবং তাকে শুট করে। এরপর যখন ওসামা বিন লাদেনের ঘরে যায় তখন কমান্ডোরা দেখে দুই স্ত্রীর পেছনে লুকানোর চেষ্টা করছে সুযোগ বুঝে কমান্ডোরা প্রথমে দুটি গুলি মারে এবং ওসামা নিচে পড়ে যায়। কামান্ডোরা তার দুই স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে এটা কি ওসামা বিন লাদেন ? তারা কোন উত্তর দেয় না। তখন ওই ফ্লোরে থাকা একজন বাচ্চাকে কমান্ডোরা পাশের ঘরে নিয়ে যায় এবং তাকে জিজ্ঞেস করে এটা কি ওসামা বিন লাদেন তখনই তার স্ত্রীদের মধ্যে একজন ভয়ে বলে হ্যাঁ এটাই ওসামা বিন লাদেন। তখন কমান্ডোরা আরো একটি গুলি মারে। ডেড বডির ছবি তুলে হেডকোয়ার্টারে কনফার্মেশন দেয় যে তারা ওসামা বিন লাদেন কে মেরে ফেলেছে। যখন ওসামা বিন লাদেনের লাশ ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে আসছিল তখন তারা অনেক ফাইল কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক অনেক ডকুমেন্ট দেখতে পায়। যেগুলো কমান্ডোরা সঙ্গে করে নিয়ে আসে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে মিশন তো সাকসেস তারা ফিরবে কিভাবে দুটো হেলিকপ্টার মধ্যে একটা তো পড়ে গিয়ে পাখা ভেঙে গেছে । তাদের জন্য ব্যাকআপ হিসেবে জালালাবাদে চিনুক হেলিকপ্টার ছিল। এমনকি এই অপারেশনের সময় যদি পাকিস্তানি আর্মি ব্যাঘাত ঘটায় তার জন্য ৭৯ জনকে জালালাবাদে বেকাপ হিসেবে রাখা হয়েছিল। কমান্ডোরা খবর দেয় এবং ব্যাকআপ টিম আসে। কমান্ডোরা যখন ফিরে আসছিল তখন পাকিস্তানের টেকনোলজিস্টরা যাতে ওই হেলিকপ্টারের সিক্রেট না জানতে পাই তার জন্য হেলিকপ্টারটিকে ব্লাস্টের মাধ্যমে ক্রাশ করে দেয়।
এইভাবে মিশন নেপচুন পেয়ার সাকসেসফুল হয়।
সব থেকে বড় ব্যাপার কি জানেন এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল ওসামা বিন লাদেনের বিল্ডিং থেকে এক কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানি আর্মির সেন্টার ছিল। তারপরেও পাকিস্তান একটুও টের পেল না। যাক গে…..
ওসামা বিন লাদেনের লাশ তো নিয়ে এলো কিন্তু লাস এখন কে নেবে, সৌদি আরব তো নেবে না কারণ লাদেন যখন এই আতংবাদি হামলাগুলো করেছিল তখন সৌদি আরব পুরোপুরি লাদেনকে ব্যান্ড করে দেয় তাই পাকিস্তান সহ সব দেশি ওসামা বিন লাদেনের লাশ নিতে চাইনি অবশেষে মুসলিম ধর্মের রীতি রেওয়াজ পালন করে লাদেনের লাশকে সমুদ্রে দাফন করা হয় ।
আজকের post কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্টে জানিও এরকম ধরনের post পাওয়ার জন্য Follow করে নিও আর যদি পারো একটু বন্ধুদের শেয়ার করে দিও ধন্যবাদ।